New Normal এ আবার পুরী দিয়ে বেড়ানোর হাতেখড়ি করতে হলে যা যা জেনে যেতে হবে

               

PURI SEA BEACH, ODISSA, INDIA , TRAVEL

 

যার হাত ধরে বেড়ানোর হাতেখড়ি তাকেই যদি চিনতে  না পারেন  তাহলে কেমন লাগবে ?  হ্যাঁ , সেই রকম ঘটনাই  ঘটবে যদি বছর খানেক  পুরী বেড়াতে গিয়ে না থাকেন।  কথাতেই আছে বাঙালীদের বেড়ানোর  হাতেখড়ি হয়  দীঘা, পুরী বা দার্জিলিং এর হাত ধরে। অনেকে আবার সংক্ষেপে "দীপুদা" বলেন। আমারও বেড়ানো শুরু হয়েছিল ছোটবেলাতে পুরী ভ্রমণের মধ্য দিয়ে। আমি তার পরে অনেকবার গিয়েছি। প্রতিবারেই কিছু না কিছু পরিবর্তন দেখে আসছি  কিন্তু এবারে জগন্নাথদেবের মন্দিরের সামনে যে ভাবে  পরিবর্তন হয়েছে  দেখলাম  তাতে বেশ অবাক হলাম।  মূল প্রবেশদ্বারের আশেপাশে দোকান ,  সামনে ব্যস্ত রাস্তা এই ছবিটাই  মনের মধ্যে এতদিন ছিল। সেটাই  দেখে এসেছি  শেষ বার  ( ২০১৭ সাল )  পুরী দর্শনের সময়। 

PURI  JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথদেবের মন্দির , আগেকার চিত্র

 

PURI  JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথ দেবের মন্দির , আগেকার চিত্র

 

PURI  JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথদেবের মন্দির , বর্তমান চিত্র

PURI  JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথদেবের মন্দির প্রাঙ্গন, বর্তমান চিত্র

           এখন  নিউ নর্ম্যালে যদি  সেই  পুরী দিয়েই  আবার  বেড়ানোটা  শুরু করতে চান তাহলে   এখনকার  নিয়মকানুন  একটু  জেনে নিয়ে যান।  এখন  পুরী মন্দির প্রবেশের জন্য  মন্দিরের অনেক আগেই  লাইন দিয়ে  ঢুকতে হবে।  মুখে  মাস্কতো  থাকতেই  হবে।  চটি, মোবাইল  অন্যান্য জিনিষ  বাইরে খুলে রেখে লাইনে আসতে হবে।  অন্যান্য বড় বড়  মন্দিরের মত  এখানেও  লোহার  রেলিং দিয়ে ঘিরে  জিগজ্যাগ পথ করা হয়েছে।  সেই পথ দিয়ে  এগিয়ে  একজায়গায়  চেকিং হবে।  তারপরে  আবার এগিয়ে যেতে হবে।  মাঝখানে  স্যানিটাইজার নেবার  ব্যবস্থাও করা আছে ।   এখন  সমগ্র পথটির   মাথায়  ছাউনি করা হয়েছে।  আশেপাশে  ফুলের  বাগান ,  রাতে আলো ঝলমলে  পরিবেশ।  মন্দির দর্শন করার  পরে  মন্দিরের বাইরে  একটু  সময় দেবেন বেশ  ভাল  লাগবে। 

PURI JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথদেবের মন্দির প্রাঙ্গন, বর্তমান চিত্র

PURI JAGANNATH TEMPLE, ODISSA, INDIA
জগন্নাথদেবের মন্দির প্রাঙ্গন, বর্তমান চিত্র

                   এবার  আসি  সমুদ্র  সৈকতের  কথাতে।   ফণী    আমফান মিলে   সৈকতের অনেক ক্ষতি করেছে। অসমান হয়ে গেছে সৈকত। সমুদ্র স্নান করার সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।  তাই  স্নানের সময়  মজা করার পাশাপাশি সতর্ক থাকতে হবে।  যেটা আগে পুরীতে  ছিল না।  প্রশাসনের পক্ষ থেকে  পুলিশ গাড়িও  বালির উপর  দিয়ে  যাওয়া আসা  করে  সব সময়  পর্যটকদের উপর নজর রাখছেন।   আর  একটা  বিষয় বলা  দরকার  সমুদ্র সৈকত  এখন  পরিস্কার  রাখার  দিকে  নজর  দিয়েছেন সকলেই ।  বালির  মধ্যে  মাঝে মাঝেই  বসানো আছে  ময়লা ফেলার জন্য  "USE ME"   লেখা ড্রাম।  এখানকার বিক্রেতারাও খুব সর্ক  এই ব্যাপারে।    আমরা চা,  মুড়ি  ইত্যাদি  যখন যা খেয়েছি  বিক্রেতারাই আমাদের  অনুরোধ করেছেন যাতে  বালিতে  কাপ বা ঠোঙা  ইত্যাদি  না ফেলি।   আমরা তাদের  কথা মত  খাওয়া শেষে একজায়গায়  জড়ো করে রেখেছি  চা খাওয়া কাপ বা  মুড়ির  ঠোঙা।  পরে তারাই  নিয়ে গেছেন সেগুলো  তাই  আমাদেরও  এই  সমুদ্র সৈকত  পরিছন্ন রাখার  ব্যাপারে  সতর্ক  থাকা  দরকার।  

 


 

                             শেষে  আসি  জগন্নাথদেবের  মন্দিরের  মাথায়  যে  পতাকা  প্রতিদিন  পাল্টানো হয়  তা  দর্শন করার বিষয়ে।   আমি   আগেও  এই  শুভ অনুষ্ঠানের সাক্ষী  থাকতে  পেরেছি।  আগের বার  ছিলাম  মন্দিরের ভিতরে।  তবে   বাস্তব  অভিজ্ঞতা  থেকে   একটা  ছোট পরামর্শ  দিচ্ছি  ভাল  মনে  হলে  নিতে  পারেন।   সেটা হচ্ছে  মন্দিরের  ভিতরে থেকে  পতাকা  পাল্টানো দেখার  থেকে  মন্দিরের  বাইরে  থেকে  দেখুন।  ভিতরে  প্রবেশের জন্য আপনাকে সমস্ত নিয়ম মেনে আসতে হবে।  ভীড়  বেশী  হয়ে গেলে সঠিক জায়গা পাওয়া  মুশকিল হয়।  সেখান থেকে  এত উঁচু  মন্দিরের চূড়া নজর করা মুশকিল।  আপনি যদি  এই  পবিত্র  অনুষ্ঠানটির  ছবি তুলতে  চান  সেটা  ভিতরে থেকে  কোনদিনই  সম্ভব হবে না।  এখন  মন্দিরের  বাইরের জায়গা  এতটাই  বেশী ও  এতটাই  সুন্দরসুশৃঙ্খল  যে  এখান থেকে  দাঁড়িয়ে  নিজের মত করে  এই  ঘটনার  সাক্ষী থাকতে  পারবেন। ফ্রেম বন্দী করতে পারেন এই ঘটনাও।

                 সবশেষে বলি , ভয় ভেঙে নিউ নর্ম্যালে আবার পুরী দিয়েই সকলের বেড়ানো শুরু হোক।

অন্য কিছু কথাঃ

১) এখনও ট্রেনে কোন বেডরোল দেওয়া হচ্ছে না। তাই নিজেকেই চাদর ও বালিশের ব্যবস্থা করে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া সাথে রাখতে হবে  হাতে নেবার স্যানিটাইজার, সীটে দেবার জন্য স্যানিটাইজার।

২)  মনে করলে বাড়ির  চাদর লজের বিছানায় পেরে দিতে পারেন। তাতে খানিকটা কাজ হবে।

৩)  মাস্ক একাধিক সাথে রাখতে হবে।  

 


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন